(Compensation for kharif crops)বাঁকুড়া জেলায় বাংলা শস্য বিমার আওতায় চাষিদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, প্রায় ১,৪০,৭৮৮ জন নতুন চাষি অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। তবে, জমির পরিমাণে মাত্র ২,৯৮৭ হেক্টরের বৃদ্ধি হয়েছে। এটি নির্দেশ করে যে, নতুন চাষিরা হয়তো ছোট বা সীমিত পরিসরের জমিতে চাষ করছেন, যা তাদের জমির পরিমাণের তুলনায় চাষিদের সংখ্যা বেশি।
বিরোধী দলগুলি প্রশ্ন তুলছে যে, চাষির সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও জমির পরিমাণ তেমন বৃদ্ধি পায়নি, যা একটি বিপরীত সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়। সারা ভারত কৃষকসভার বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক যদুনাথ রায় বলেছেন, “চাষির সংখ্যা বাড়ানোর পরিসংখ্যান দেখালেও জমির পরিমাণ তেমন বাড়েনি।” এর মানে হলো, চাষির সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে জমির পরিমাণের বৃদ্ধি অনুপাতে কম।
তিনি আরও বলেন, “আনুপাতিকভাবে চাষি পিছু জমির পরিমাণ অত্যন্ত কম,” যা বোঝায় যে প্রতি চাষির কাছে জমির পরিমাণ খুবই সীমিত। এর ফলে, যেহেতু জমি বাড়েনি, সেহেতু চাষিরা আরও ছোট আয়তনের জমিতে চাষ করছে, যার কারণে তাদের কৃষি আয় কম হতে পারে এবং কৃষির জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো ও সাহায্য আদায় করা কঠিন হতে পারে।
শস্য বিমা অন্তর্ভুক্ত করার বিশেষ পদক্ষেপ–
বাঁকুড়ার উপকৃষি অধিকর্তা দেবকুমার সরকার জানিয়েছেন, এ বছর তাদের লক্ষ্য ছিল বেশি সংখ্যক চাষিকে বিমার অন্তর্ভুক্ত করা। তারা চাষিদের জমির প্রকৃত তথ্য আপলোড করেছেন এবং কৃষকবন্ধু প্রকল্পের আওতায় থাকা প্রত্যেক চাষি বিমার সুবিধা পেয়েছেন।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খরিফ ফসল(Compensation for kharif crops)-
রিফ মরসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টির কারণে ধান চাষ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল, কারণ পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে চাষ শুরু করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে পরবর্তীতে ভালো বৃষ্টি হওয়ায় চাষে গতি আসে। কিন্তু তারপরেই একাধিক নিম্নচাপ এবং দামোদরের বন্যা হয়ে ধান চাষে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়।
জেলা প্রশাসনের রিপোর্ট অনুযায়ী, দানা ঘূর্ণিঝড়ের কারণে প্রায় ১০,৭৭০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে, যা কৃষকদের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি। এর পরেও, অসময়ের অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ক্ষতির মাত্রা আরও বেড়েছে, কারণ অতিরিক্ত পানি জমির ক্ষতি করে এবং ধান গাছের পচন অথবা ভেঙে যাওয়া ঘটাতে পারে।
এভাবে, একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা, যা তাদের আয় এবং জীবিকা বহনে সমস্যার সৃষ্টি করেছে।
Read More: Modi is providing a loan of 10 lakh rupees
ক্ষতিপূরণ দাবি করে কৃষকসভার প্রতিবাদ–
যদুনাথ রায় দাবি করেছেন, শস্য বিমারের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র চাষির সংখ্যা বৃদ্ধি নয়, বরং ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের সঠিক ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে এই দাবিটি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে।(Compensation for kharif crops)
প্রশাসনিক আশ্বাস–
উপকৃষি অধিকর্তা জানিয়েছেন, বাঁকুড়া জেলার ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের তথ্য রাজ্য সরকারকে পাঠানো হয়েছে। রাজ্য প্রশাসন এই তথ্য যাচাই-বাছাই করবে এবং এরপর ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করবে। তবে, বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী চাষিরা এখনও ক্ষতিপূরণের জন্য অপেক্ষা করছেন, কারণ তাদের ক্ষতির পরিমাণ এবং ক্ষতিপূরণের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়নি।
ফসলের ক্ষতিপূরণের টাকা কখন প্রদান করবে–
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে খরিফ সিজনের ফসলের ক্ষতিপূরণের টাকা কৃষকদের দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে এখনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। জেলা থেকে কৃষকদের নামের তালিকা রাজ্য কৃষি দপ্তরে পাঠানো হয়েছে, এবং ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে কৃষকরা তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়ে যাবেন।(Compensation for kharif crops)
কোন কৃষক কত ক্ষতিপূরণ পাবে–
বাংলা শস্য বীমা প্রকল্পে ফসলের ক্ষতিপূরণের টাকা কৃষকদের মধ্যে সমানভাবে বিতরণ করা হবে না। যে কৃষকদের বেশি জমির বীমা করা হয়েছে এবং যারা বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন, তারা বেশি ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন। অন্যদিকে, যাদের জমির পরিমাণ কম এবং ক্ষতি কম হয়েছে, তারা কম ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন।(Compensation for kharif crops)
এভাবে, ক্ষতিপূরণের পরিমাণ কৃষকের জমির পরিমাণ এবং ক্ষতির ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে। কৃষকরা তাদের জমির বীমা তথ্য অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের টাকা তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাবেন।
Official Site: Click Here